গতবারে লিখেছিলাম বাবার চিত্রজগতে যোগ দেওয়ার অনুপ্রেরনার কথা, আজ চলচ্চিত্রে প্রবেশের পরের কয়েকটা কথা বলব।
…বিয়ের পরে চার দিনের দিন আমার জীবনের প্রথম শুটিং। শ্বশুরবাড়ির পাড়াতেই রাধা ফিল্ম স্টুডিওতে। শ্বশুরমশাইয়ের আপত্তিতেই কাজের নাম করে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসি। আমার চরিত্রটি ছিল দুর্ভিক্ষপীড়িত এক লোকের। তাই পোষাক ছিল শরীরে এক খণ্ড চট দড়ি দিয়ে বাঁধা। আমার শ্বশুর ওই পোষাক দেখে তো অসম্ভব ক্ষিপ্ত।যাই হোক, কোনওমতে অবস্থার সামাল দেওয়া হয়। সাড়ে চুয়াত্তরেই আমি জনপ্রিয়তা লাভ করি। তার পর থেকেই “মাসীমা মালপোয়া খামু” এই সংলাপটি আমার নামের সাথে প্রায় সমার্থক হয়ে যায়।…
বাবা যখন গাড়ী কিনলেন তখন আশেপাশের লোকেরা জহর কাকাকে বলতে আরম্ভ করল যে, ভানু গাড়ী কিনে ফেলল আর তুই কিনলি না? জহর কাকা উত্তর দিতেন “কেন, ওটা তো আমারো গাড়ী”। আর সেটা যে কতদুর সত্যি তার দৃষ্টান্ত হল প্রতি শনিবার সকালে আমাদের গাড়ী জহর কাকার কাছে চলে যেত আর উনি তারাপীঠ ঘুরে আসতেন আর আমাদের কাছে এটাই খুব স্বাভাবিক মনে হত।
বাবার আত্মকথন থেকেই এই আখ্যান তুলে ধরলাম। সত্যি কথা বলতে কী, একজন দর্শক ও মেয়ে হিসেবে বলতে পারি এই সংলাপের বলার ধরনের কোনও তুলনা নেই। এর পরবর্তী সময়টা তো ইতিহাস। জহরের সঙ্গে জুটি বেঁধে বা একা সুচিত্রা–উত্তমের প্রায় সব ছবিতেই বাবাকে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত মনে পড়ে গেল বাবার সঙ্গে উত্তম কাকুর সম্পর্কের কথা। বাবার থেকে ছয় বছরের ছোট ছিলেন উত্তমকাকু, অসম্ভব স্নেহ করতেন বাবা। শলা-পরামর্শ দেওয়া বা ব্যক্তিগত কথা নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হত। উত্তম কাকু যখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে তখনও কোন একটি দৃশ্যে অভিনয় করার পর বাবাকে জিজ্ঞেস করতেন ঠিক ছিল কিনা। বাবার তরফ থেকেও একই প্রথা।
বাবার জীবনের একটা বড় অংশ জুড়ে ছিলেন ছবি বিশ্বাস। বাবার friend, philosopher, guide. বাবাকে কখনও এক চেয়ারে ছবি জ্যাঠামশাইয়ের পাশে বসতে দেখিনি, পায়ের কাছে বসতেন। যতটা সময় সম্ভব ওঁর সঙ্গে কাটাতেন। উনিও বাবাকে আর আমাদের ভীষন স্নেহ করতেন। আমার মা এর সঙ্গে ভীষন সুন্দর একটা সম্পর্ক ছিল, উনি আমার মাকে বন্ধু বলে ডাকতেন।
জহর কাকা ও বাবার যেরকম সম্পর্ক ছিল তা আজকালকার লোকেরা চিন্তাতেও আনতে পারবেনা। শোনা যায় বাবা যখন গাড়ী কিনলেন তখন আশেপাশের লোকেরা জহর কাকাকে বলতে আরম্ভ করল যে, ভানু গাড়ী কিনে ফেলল আর তুই কিনলি না? জহর কাকা উত্তর দিতেন “কেন, ওটা তো আমারো গাড়ী”। আর সেটা যে কতদুর সত্যি তার দৃষ্টান্ত হল প্রতি শনিবার সকালে আমাদের গাড়ী জহর কাকার কাছে চলে যেত আর উনি তারাপীঠ ঘুরে আসতেন আর আমাদের কাছে এটাই খুব স্বাভাবিক মনে হত।
বাবার জীবনের একটা বড় অংশ জুড়ে ছিলেন ছবি বিশ্বাস। বাবার friend, philosopher, guide. বাবাকে কখনও এক চেয়ারে ছবি জ্যাঠামশাইয়ের পাশে বসতে দেখিনি, পায়ের কাছে বসতেন। যতটা সময় সম্ভব ওঁর সঙ্গে কাটাতেন। উনিও বাবাকে আর আমাদের ভীষন স্নেহ করতেন। আমার মা এর সঙ্গে ভীষন সুন্দর একটা সম্পর্ক ছিল, উনি আমার মাকে বন্ধু বলে ডাকতেন।
আজ এই পর্যন্ত থাক, আবার পরের বার ঝুলি থেকে আরও গল্প শোনাব।