দশ বছর আগের কথা। ২০১৫ সাল।আর্ট ইন এবং সেনসোরিয়াম সংস্থা দুটি, পার্ক স্ট্রিটের একটি গ্যালারিতে সাদা–কালো যুগের দুষ্প্রাপ্য কিছু সিনেমার স্টিল ফোটোগ্রাফ, পুরনো ছবির পোস্টার সাজিয়ে এক প্রদর্শনীর উদ্যোগ নিয়েছিল। সেখানে সেই যুগের কিছু সিনেমার ‘সীমিত সংস্করণ’ চোখের সামনে মেলে ধরারও আয়োজন ছিল।
তারপর কেটে গিয়েছে দশটা বছর। আর্ট ইন এবং সেনসোরিয়াম আবারও প্রয়াসী হল সেইরকমই আরেক প্রদর্শনী সাজাতে। হো চি মিন সরণীর আইসিসিআর-এর অবনীন্দ্রনাথ টেগোর গ্যালারিতে ‘সালাম সিনেমা’ নামে যে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে ২৭ জুন, চলবে ২ জুলাই, বিকেল তিনটে থেকে রাত আটটা পর্যন্ত। উদ্যোক্তা দুই সংস্থার দুই কিউরেটর শমীক দে (আর্ট ইন) এবং শৌনক চক্রবর্তী (সেনসোরিয়াম)।
ভারতীয় সিনেমা বিশেষত বাংলা সিনেমার হারিয়ে যাওয়া যুগকে দৃশ্যপটে ফিরিয়ে আনার জন্যই এই প্রদর্শনীর আয়োজন। তবে মূল উদ্দেশ্য হল, ফেলে আসা দিনের সিনেমার উতকর্ষতা সম্বন্ধে দশর্কদের ধারণা দেওয়া, গৌরাবাণ্বিত করে তোলা। ইদানীং দেশ এমনকী বিশ্ব জুড়ে কিছু নির্বাচিত পুরনো সিনেমা ফের সিনেমা হলে ফিরে দেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যেমন কয়েক সপ্তাহ আগে ৭৮ তম কান ফেস্টিভ্যালে গোল্ডেন গ্লোব ফাউন্ডেশন –এর উদ্যোগে সত্যজিত রাযের ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ দেখানো হল কিছুদিন আগে। যেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন শর্মিলা ঠাকুর। আবার এই ২৭ জুন তারিখেই এনএফিডিস-এর পুনরুদ্ধার করা মুজফফর আলি পরিচালিত, রেখা অভিনীত ১৯৮১ সালের ‘উমরাও জান’ মুক্তি পেল বড় পর্দায়। সমাপতন মনে হলেও এটাই সত্যি, ওই একই দিনে উদ্বোধন হওয়া সালাম সিনেমা শিরোনামের প্রদর্শনীটিতেও থাকছে বহু হিট সিনেমার তিরিশটিরও বেশি পোস্টকার্ড। যার মধ্যে অরণ্যের দিনরাত্রি সিনেমাটিও আছে। আর থাকছে বেশ সিনেমার দুষ্প্রাপ্য লবিকার্ড। হিট কিছু সিনেমা মুহূর্ত দেখে স্বল্প সময় পরিসরে দেখে নেওয়ার সুযোগ।
প্রদর্শনীতে রাজ কাপুর, অরুন্ধতী দেবী, মহম্মদ রফি, সলিল চৌধুরী, ঋত্বিক ঘটক, রাজ খোসলা, তপন সিংহের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অভিজ্ঞানগুলি রয়েছে ইতিউতি। সব মিলিয়ে সালাম সিনেমা শিরোনামে প্রদর্শনীটি ভাবী কালের কাছে অতীত ঐতিহ্যের সিন্দুকের চাবিকাঠি তুলে দেওয়ার এক আয়োজন।