ভাবনায় অবনীন্দ্রনাথ

…চমকে মুখ তুলে চেয়ে দেখি সামনে আকাশ লাল টকটক করছে, সূর্যোদয় হচ্ছে। সে কী রঙের বাহার, মনে হল যেন সৃষ্টিকর্তার গায়ে জ্যোতি ছড়িয়ে দিয়ে সূর্যদেব উদয় হচ্ছেন। সৃষ্টিরক্ষার এ প্রভা চোখ মেলে না দেখে আমি কিনা চোখ বুজে তাঁকে দেখতে চেষ্টা করছিলুম। সেদিন বুঝলুম আমার রাস্তা এ নয়; চোখ বুজে তাঁকে দেখতে যাওয়া আমার ভুল। শিল্পী আমি, দু’চোখ মেলে তাঁকে দেখে যাব জীবনভোর।

গণতন্ত্র জনগনের প্রচন্ড কৌতুক

উপনিষদে একটা কথা আছে—‘ক্রুতো স্মর, কৃতং স্মর’ অর্থাৎ কী করার কথা ছিল তা স্মরণ কর এবং কী করা হয়েছে তাও স্মরণ কর। স্বাধীনতার এই আটাত্তর বছর পরে আমাদেরও আজ সেই ফিরে দেখার দিন– কী প্রতিজ্ঞা আমরা শুরু করেছিলুম এবং আজ কোথায় এসে পৌঁছেছি।

রাজভোজ (দ্বিতীয় পর্ব)

‘খিচরি’‍ অন্যতম আদি ভারতীয় পদবিশেষ যার সংস্কৃত নাম ‘কৃশর’৷ কয়েক হাজার বছর ধরে সমানভাবে‍ উপভোগ্য আজকের ‘খিচুড়ি’ চাল, ডাল, ঘি, দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, তরকারি, তেজপাতা ও অন্যান্য মশলার সঙ্গে সেদ্ধ করে তৈরি হয়ে থাকে৷ যদিও প্রাদেশিক প্রকারভেদে স্বাদের বিভিন্নতায় উপকরণ কিছু কিছু অন্যরকম৷ ইংরেজরা ডালের বদলে মাছ, মাংস ও ডিমের টুকরোর সঙ্গে মাখনের মিশেলে চাল দিয়ে চিরাচরিত পদটির নাম নিজেদের উচ্চারণে তৈরি করলেন ‘kedgree’৷ শুধু তাই নয়, অষ্টাদশ শতকে এর রন্ধন প্রণালী ব্রিটেনে পৌঁছে‍ যথেষ্ট তৃপ্তিকর হিসেবে জনপ্ৰিয় হয়ে উঠেছিল৷ রানি ভিক্টোরিযা এবং তাঁর পুত্র এডওয়ার্ড-এর আমলে ইংল্যান্ডের গ্রামের গৃহকোণে খাবার টেবিলে সকালের জলখাবারে ভাজা মাছ ও ডিমের কোনও পদের পাশে এই kedgree স্থায়ী একটা জায়গা পেয়ে গিয়েছিল৷

রাসবিহারী বসু ও তোসিকো

বিয়ের কথা এগিয়ে চলল৷ ৯ জুলাই ১৯৪৮— পরিচয়ের খুব তাড়াতাড়িই তাঁদে‍র বিয়ে হল— কোনও সমারোহ ছাড়াই৷ বসুর প‍ক্ষে তো কেউই নেই, কনে প‍ক্ষের আত্মীয়স্বজনরাও কেউ এলেন না৷ খুব একটা সাধারণ পোশাক পরে বাবার সঙ্গে ট্রামে চড়ে তোসিকো তোয়ামার বাড়িতে এলেন৷ তাকাশিমারায় ডিপার্টমেন্ট স্টোর থেকে কিনে আনা ওয়েডিং কিমোনো পরিয়ে দিলেন শ্রীমতী তোয়ামা৷ 

রূপকথার রাজপুত্র : দ্বারকানাথ (পর্ব-৫, ৬)

মহারাণী ভিক্টোরিয়া ও দ্বারকানাথের প্রীতিসম্পর্ক ঘিরে নানা গল্প প্রচলিত আছে ।দ্বারকানাথের রূপ, ঐশ্বর্য ও প্রতিভার সঙ্গে শিভালরিও  যুক্ত হয়ে তাঁর মনোহারিত্ব প্রবল করেছিল।মহারাণীর দরবারে ও অভিজাত সমাজে দ্বারকানাথের প্রভাব প্রতিপত্তি দেখে ইস্ট ইন্ডিয়ার ডিরেক্টররা আতঙ্কিত বোধ করেন ।

নাচো তো দেখি!

হ্যালো? কে?… ও আচ্ছা আচ্ছা! নমস্কার স্যার! প্লিজ কিছু মনে করবেন না। অচেনা নম্বর থেকে ফোন এসেছে বলে আমার গলার …

বাওয়ারের পাঞ্চালী

আমি আসায় ঘরের এক পাশে সেলাই করা অনেকগুলো চট দিয়ে একটা পর্দা টাঙানো হয়েছে৷ না, আমার ঘর হিসেবে নয়৷ পঞ্চ স্বামীর পণ্য বউয়ের আবার আলাদা ঘর কীসের! চটের পর্দা ঘেরা অংশটি আমার নারীত্ব ভোগ করার জায়গা৷ রোজ রাতে এক স্বামী চটের পর্দার এক পাশে আমাকে ভোগ করবে৷ বাকি চার স্বামী থাকবে চটের ওপাশে৷ 

ভীষ্ম পঞ্চক

গলায় রজনীগন্ধার গোড়ের মালা৷ মেহেন্দি মাখানো হাতটায় কাচের গ্লাস ধরা আছে৷ তার হাত থেকে গ্লাসটা নিয়ে ওপাশের একটা শ্বেতপাথরের ছোট্ট টেবিলটায় রাখলেন তিনি৷ তারপর আলমারি খুলে একটা চ্যাপ্টা মতো বোতলের ছিপি খুলে অনেকটা ঢাললেন সেই গ্লাসটায়৷ তারপর এক চুমুকে সবটুকু খেয়ে নিয়ে যন্ত্রণাক্লিষ্ট গলায় একবার আঃ আওয়াজ করেই হাসলেন তিনি তার দিকে তাকিয়ে৷