স্বাধীনতার কবিতাগুচ্ছ

স্বাধীনতা

প্রীতম কাঞ্জিলাল 

স্বাধীন দেশে আমি তুমি,জানো কাদের দানে?

বলতে পারো ভেবেচিন্তে,স্বাধীন হওয়ার মানে?

স্বাধীন দেশে স্বাধীন তারা,যার পকেটে টাকা-

ইচ্ছেডানা গুটানো তাদের,যাদের হাতটি ফাঁকা।

কেউ আবার স্বাধীন বলতে,বোঝায় মনের মুক্তি,

কারো কাছে স্বাধীনতা, হিসেব কষা যুক্তি।

কারো কাছে স্বাধীন হওয়া,বাঁধন ছেড়ে বাঁচা,

কারো আবার স্বাধীনতা বোধ,এক্কেবারে কাঁচা।

নারীর কাছে স্বাধীন মানে,পুরুষসম হওয়া,

অবলা নারীর অবহেলা সব,নিজ মুখে কওয়া।

কথার কথা আবোল-তাবোল,স্বাধীনতার ঘরে-

যত্রতত্র নোংরা করা,বক্স বাজানো জোরে।

ট্রাফিক আইন পকেটে পুরে,হলদে সবুজ লাল,

নেতার চুরিও স্বাধীনতা,আজ ও আগামীকাল।

দেউলে রাজার আমরা প্রজা,স্বাধীন ছলাকলা,

নীতিকথার বিবেক মৃত,ভাঁড়ে-মা কাঁচকলা।

স্বাধীনতা যেমন তেমন,সবাই তারে মানেন,

আমরা সবাই কেমন স্বাধীন, ভগবানই জানেন।

 

প্রতিবাদ আগুন হতে পারে

অষ্টপদ মালিক

মুষ্টিবদ্ধ হাতখানি তুলে ধরো

অনন্ত উদার আকাশ

তোমাকে বুকে টেনে নেবে

চোখে চোখ রেখে

নর – পিশাচকে বুঝিয়ে দাও

প্রতিবাদ কখনো নিঃশেষ হয় না

প্রতিবাদের বীজ মন্ত্র লুকিয়ে থাকে

মানবিকতার শক্ত জমিতে

প্রতিবাদ আগুন হতে পারে !

 

সিঁড়ি

উদয়ন গোস্বামী

কাল সারাদিন দিগ্বিদিকের সন্ধানীরা

খুঁজলো তোমার পদ্মপাতার গুপ্ত সিঁড়ি…

“জলকে চলো”-কলসী বুকের তরল পীড়া

তেঁতুল পাতার জিহ্বা পেল, গরল পিঁড়ি…

 

বাম ঊরুতে গোলাপ গোলাপ সন্ধ্যা বেয়ে,

তানপুরা তার পদ্মপাতার অপেক্ষাতে

বিষ খুঁটে খায়, নীলের জ্বালায় ধন্যি মেয়ে-

ছাদনাতলায় আগুন নিল কলসী হাতে…

 

তেঁতুল পাতার যাত্রী বোঝাই লালচে ধুলো

কাল সারারাত গোলাপ গোলাপ বাষ্প সাজে…

কলসীগুলোয় ধন্যিমেয়ে নীল মাখালো,

বাম ঊরুতে একতারা তার উঠলো বেজে…

 

ধন্যি মেয়ের বাষ্প শরীর বিয়ের সাজে

একতারা কার বাম ঊরুতে নিত্য বাজে…!