বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি—
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গিকার।
(ছাড়পত্র – সুকান্ত ভট্টাচার্য)
কিন্তু সত্যিই কি পৃথিবী আর ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য থাকবে?
বিজ্ঞানী ও প্রকৃতি বিশেষজ্ঞদের উত্তরটা অবশ্য অনেকাংশেই নেতিবাচক। তাঁদের ঘোর আশংকা, যে হারে এই বিশ্ব উষ্ণায়ন ও পরিবেশ দুষণের শিকার হচ্ছে, তার জেরে ‘শেষের সেদিন মহা ভয়ংকর’। কারণ চলতি পরিস্থিতিতে এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না, ‘সুজলাং সুফলাং’ এই পৃথিবী হয়ত একদিন পরিবেশগত সমস্ত ভারসাম্য হারিয়ে এক মৃত গ্রহে পর্যবসিত হবে। যা মানব সভ্যতার বিবর্তনের গতি রুদ্ধ করবে।
তাই বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণার মাধ্যমে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন পৃথিবীর বাইরে এক নয়া বসতির পত্তনের জন্য। অর্থাৎ ব্রহ্মান্ড এর অন্য কোনও গ্রহ বা উপগ্রহই হবে মানুষের নতুন ঠিকানা। সারা বিশ্ব জুড়েই বিজ্ঞানীরা এই নিয়ে গবেষণার কাজ করছেন। এই কাজে পিছিয়ে নেই কল্লোলিনী কলকাতাও। প্রচারের আলোর বাইরে এই শহরেরই এক বিজ্ঞানসাধকও অন্য কোনও গ্রহ বা উপগ্রহ কীভাবে মানুষের বসবাসের যোগ্য করে তোলা যায়, তার অনুসন্ধানে মগ্ন রয়েছেন। এই বঙ্গ সন্তানের নাম ড. শতদল দাস।
আসলে এই পৃথিবীতে মানুষ- নানা জীবজন্তু বা উদ্ভিদ তথা সামগ্রিকভাবে প্রাণের বিকাশ ও রক্ষায় রয়েছে কতগুলি জরুরি প্রাকৃতিক উপাদান। যেমন, জল, অক্সিজেন ইত্যাদি। গ্রহান্তরে নতুন ঠিকানাতেও মানুষের দরকার হবে সেই সব উপাদানের। তবে যে কোনো গ্রহ-উপগ্রহ নয়া বসতি হিসেবে বাছাই করলেই হবে না। দেখতে হবে সেখানে প্রাণের বহমানতার উপযুক্ত শর্ত ন্যূনতম বা আদৌ কিছু আছে কিনা। যদি বা থাকে, তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল বিজ্ঞানের সূত্র মেনে সেই গ্রহকে মানুষের জীবনযাপনের উপযোগী করে তোলার মত অসাধ্য সাধন। সেই চ্যালেঞ্জই নিয়েছেন ড. দাস। সারা বিশ্বেই আদৃত হচ্ছে তাঁর গবেষণা। এক কথায়, তাঁর হাত ধরেই গ্রহান্তরে বিশ্ব মানবের জয়যাত্রা বা স্পেস ওডিসি’র স্বপ্ন পূরণের অন্যতম শরিক আমাদের কলকাতাও!
ড. শতদল দাসের গবেষণার উপর আলোকপাত করে, ‘শনিবারের চিঠি’কে দেওয়া একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে ড. দাস বলেন, ‘মনুষ্য প্রকৃতি বড়ই বিচিত্র। দ্বিচারিতা মানুষের স্বভাবের পরতে পরতে লুকিয়ে রয়েছে। যেমন, আমরা আমাদের বাসগৃহ বা সুখী গৃহকোণের সবিশেষ যত্ন নিই। যথাসম্ভব সেটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখার চেষ্টা করি। দুর্ভাগ্যের কথা আমাদের যে বাসভূমি মানে পৃথিবী, তার প্রতি আমাদের যত্নের মানসিকতার বড়ই অভাব। যেমন, নির্বিচারে গাছ কাটা, ফসিল ফুয়েলের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে প্রাকৃতিক দূষনের বিষ বাষ্পে পরিবেশ ভারাক্রান্ত করে ফেলা, জলাভূমি বোজানো বা সারি সারি আকাশ ছোঁয়া ইমারত বানিয়ে ভূগর্ভে জলের ভাণ্ডার নিঃশেষ করা, কোনও কিছুতেই আমরা ডরাই না। কিন্তু এর নিট ফল যে এই সুন্দর পৃথিবীকে চিরতরে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া, তা আমরা বুঝেও বুঝি না।’
তাঁর সংযোজন, ‘শেষের সেদিনে কিন্তু বুক ভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো অক্সিজেন আর আমরা পাব না, ধুলোর ঝড়ের তাড়নায় আমাদের জীবন হবে জর্জরিত, মিলবে না তেষ্টার জল, ঊর্বরা জমি হয়ে যাবে চাষের অনুপযুক্ত।’ তিনি জানান, ভবিষ্যতের সেই ধ্বংসের বা আপকালিপ্সের দুঃস্বপ্ন দেখতে দেখতে তো মানুষ কালক্ষেপ করতে পারে না। তাই বিশ্বজুড়েই শুরু হয়েছে গ্রহান্তরে নয়া আশ্রয় বা হিউম্যান সেটেলমেন্টের নতুন ঠিকানার সন্ধান। এই কাজে পিছিয়ে নেই আজকের বিকশিত ভারতও। এক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য উন্নত রাষ্ট্রের সঙ্গে কদম কদম এগিয়ে যাচ্ছে এই দেশও।
এই মুহুর্তে ভারতসহ নানা দেশের বিজ্ঞানীদের নিরলস গবেষণায় যে গ্রহ বা উপগ্রহগুলি ভবিষ্যতে মানুষের সম্ভাব্য স্পেস কলোনী বা সেটেলমেন্ট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে, সেগুলির মধ্যে অগ্রগণ্য হল মঙ্গল গ্রহ, চাঁদ ও ইউরোপা। ‘শনিবারের চিঠি’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. দাস মানুষের জীবন যাপনের নানা শর্ত সাপেক্ষে এগুলির মধ্যে কোনটি দীর্ঘ দৌড়ে বসবাসের জন্য কতটা আদর্শ বা উপযোগী করে তোলা যেতে পারে, তার একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণও করেছেন।

তাঁর ব্যাখ্যায়, বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপার অন্যতম ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য যে, তার ভূগর্ভে, মাটির প্রায় কুড়ি কিলোমিটার তলায় রয়েছে এক টলটলে জলের ভাণ্ডার। পৃথিবীর সমস্ত সাগরের চেয়ে ইউরোপার মাটির তলার এই সমুদ্র কয়েক গুণ বড়! সাধারণ ভাবে বিজ্ঞানীরা এটাও মনে করছেন যে গ্রহান্তরে প্রাণের (এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল লাইফ) সন্ধানে ইউরোপার এই সাগরই পাখির চোখ হওয়া উচিত। এরই সমান্তরাল ধারায় অবশ্য বৃহস্পতির এই উপগ্রহে মানুষের বসতি স্থাপনের অন্যতম অন্তরায় ভয়ঙ্কর ঠান্ডা। যার মাত্রা মাইনাস ১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে মাইনাস ২২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর সঙ্গে ইউরোপাতে বায়ু মন্ডল নেই বললেই চলে। এরই সঙ্গে এই উপগ্রহে মাধ্যাকর্ষণের শক্তি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের তুলনায় মাত্র ১৩ শতাংশ। যা বায়ুমণ্ডল ধরে রাখার পক্ষে মোটেই সুবিধার নয়। ড. দাসের মতে, ‘এখানেই পৃথিবীর সুবিধা। মাধ্যাকর্ষণের শক্তির জেরে এই গ্রহ বায়ুমণ্ডলকে ধরে রাখতে পারে। এই অঙ্কের নিরিখে পৃথিবীর তুলনায় ইউরোপার মতোই চাঁদ ও মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণের মাত্রাও বেশ কিছুটা দুর্বল। যেমন, পৃথিবীর তুলনায় চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ ৬ ভাগের এক ভাগ। আবার পৃথিবীর সঙ্গে তুলনায় মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণ মাত্র ৩৮ ভাগ। কোনো কিছুর ওজন পৃথিবীতে ১০০ কেজি হলে মঙ্গলে তার ওজন ৩৮ কেজি। সব মিলিয়ে পৃথিবীতে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির জেরে বায়ুমণ্ডল ধরে রাখার পরিস্থিতি রয়েছে, তা মানুষ তথা জীব জগত ও উদ্ভিদের প্রান ধারণের উপযোগী।’
তাহলে কি গ্রহান্তরে মানুষের উপনিবেশ স্থাপনের স্বপ্ন নেহাতই অধরা থেকে যাবে? এ কি শুধুই সায়েন্স ফিকশন বা কষ্টকল্পনা! বা, হলিউডের দুনিয়া কাঁপানো বক্সঅফিস হিট ‘ইন্টারস্টেলার’-এর মতো রুপোলি পর্দায় ছায়াছবির রুদ্ধশ্বাস ম্যাজিক!
কুপারের যে ছবিতে ভবিষ্যতের প্রেক্ষাপটে নাসার প্রাক্তন পাইলট জোসেফ কুপার, বিজ্ঞানী ড আমেলিয়া ব্র্যান্ড ও আরো কয়েকজন নভোশ্চর শনি গ্রহের লাগোয়া একটি গ্যালাক্সিতে পাড়ি দিয়েছিলেন। কারণ, সেখানে রয়েছে ১২ টি মনুষ্য বসবাসের যোগ্য গ্রহ। কারণ, আর যে উপায় নেই। ক্রমাগত ধুলোর ঝড় এর কষাঘাতে ধরিত্রীর বুকে আর কোনো সবুজের ছোঁয়া নেই। কুপারের কিশোরী কন্যা মার্ফ অবশ্য কাকুতি মিনতি করেছিল, ‘বাবা তুমি যেও না আমাকে ছেড়ে।’ সেই বারোটি গ্রহের মধ্যে একটি ছিল মানুষের উপনিবেশ তৈরির জন্য আদর্শ। সেখানেই আমেলিয়াকে রেখে বহু বছর পরে যখন কুপার ফিরে এলেন তাঁর কন্যার কাছে, তখন মার্ফ বয়সের ভারে ন্যুব্জ। কুপার কিন্ত মহাকাশে টাইম ট্রাভেলের দৌলতে তখনও যুবক রয়েছেন। শেষ পর্যন্ত মার্ফ তাঁকে জানালো আমেলিয়ার কাছে ফিরে যেতে। নতুন ‘পৃথিবী’তে সে যে তাঁর জন্য অপেক্ষায় রয়েছে!
ড দাসের মতে, ‘এটা অবশ্যই কল্প বিজ্ঞান। কিন্তু তাতে বাস্তবের কিছু ছোঁয়া অবশ্যই আছে। যেমন, পৃথিবীতে অস্তিত্বের সংকটের মোকাবিলায় নতুন উপনিবেশের সন্ধান। বিজ্ঞানীরা এই বিষয়েও একমত যে, তা এক কথায় বাস্তবায়িত করা সহজ নয়। সে জন্যই তো চলছে গবেষণা।’
খোদ বাংলার মাটিতেই এই গবেষণায় এক অগ্রগণ্য ভূমিকা নিয়েছেন ড. দাস। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কীভাবে তিনি কোন দিশায় তিনি এগোচ্ছেন। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘সে ইউরোপাই হোক, মঙ্গল বা চাঁদ, আমাদের প্রথম লক্ষ্য হবে তাকে মানুষের বসবাসের যোগ্য করে তোলার জন্যে সেখানকার পরিবেশ যথাসম্ভব উপযুক্ত করে তোলা, সেখানকার স্বাভাবিক পরিবেশগত যে অনুষঙ্গ বা উপাদানগুলি রয়েছে, বিজ্ঞানের সূত্র মেনে সেগুলিকে কাজে লাগিয়ে।’
যেমন, চাঁদে জল, অক্সিজেন ও খাবার উৎপাদনের কথা ভাবতে হবে। চাঁদে যে জল রয়েছে তা মানব অস্তিত্ব রক্ষার জন্য কাজে লাগাতে হবে। চাঁদের বুকে এমন কিছু কাঠামো বানাতে হবে, যা মানুষের বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার পক্ষে উপযুক্ত হয়। যার অন্দরে বিকিরণের প্রকোপ থেকে মানুষ রক্ষা পেতে পারে। আর মঙ্গলের ক্ষেত্রেও পরিবেশ গত পরিবর্তন ঘটিয়ে তাকে পৃথিবীর মতোই বাসযোগ্য করতে হবে।

আর এখানেই নয়া দিশা দিয়েছেন ড দাস। ২০০৭ সালে আমেরিকায় নাসার নভোশ্চরদের উপস্থিতিতে একটি সিম্পোসিয়ামে তিনি অন্য কোনো গ্রহ বা উপগ্রহে মানবের অস্তিত্ব রক্ষার উপযুক্ত পরিবেশিত সূচনায় ডায়াটমের মত অণুজীব অনুঘটক হিসেবে কাজে লাগানোর তত্ত্ব প্রয়োগ করেন। তা বিজ্ঞানী মহলে রীতিমত সাড়া ফেলে দেয়।
একটি আলোচনাসভায় তিনি সেখানে জানিয়েছিলেন, সিলিকনযুক্ত কাঠামো সম্পন্ন সালোকসংশ্লেষের ক্ষমতা সম্পন্ন ডায়াটম ‘এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল সেটেলমেন্ট’ বা মানুষের বহির্জাগতিক উপনিবেশের বিকাশে বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ সেখানে অক্সিজেনের সরবরাহ, খাদ্যের সংস্থান বা নির্মাণের জন্য কাঁচামালের জোগানে এটি খুবই কাজে লাগবে। সালোকসংশ্লেষের ক্ষমতার জন্য এটি কার্বন ডাই অক্সাইড এর অপসারণও ঘটায়।
এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল পরিবেশে ডায়াটম জলের শোধনের মত অত্যাবশ্যকীয় কাজটি সম্পন্ন করে গ্রহান্তরের উপনিবেশে মানুষের জীবনরক্ষার অন্যতম শর্তটি পালন করে। নয়া উপনিবেশে ভূস্তরে নাইট্রোজেন ও ফসফরাস এর সংযোজনে উদ্ভিদের প্রাণসঞ্চার ও বিকাশে সহায়ক হয়। নয়া প্রযুক্তির বিকাশ, উদ্ভাবন ও প্রয়োগের সাথে ডায়াটম এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল সেটেলমেন্ট এর ক্রমবিকাশে যে এক আবশ্যিক শর্ত হতে পারে, তা নিয়ে ওই সিম্পোসিয়ামে জোরদার সওয়াল করেছিলেন ড দাস।
বলতে গেলে, বহির্জাগতিক উপনিবেশের ক্রমবিবর্তনের ইতিবৃত্তে ড. দাসের এই তত্ত্ব ছিল যেন এক বিগ ব্যাং। পরে দু হাজার দশ সালে লন্ডনেও এই সংক্রান্ত একটি সম্মেলনেও তাঁর এই তত্ত্বটিকে সাদরে গ্রহণ করেন বিজ্ঞানীরা। তাঁর এই গবেষণার ক্যানভাসে কিন্ত বহুমুখী চিন্তার আভাস মেলে। যেসব জীবাণুর আক্রমণে মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে, সেগুলির প্রতিরোধও তাঁর গবেষণার অন্যতম বিষয়। যেমন, আজ সারা বিশ্বের নানা প্রান্তে যখন যুদ্ধের আবহ, সেই প্রেক্ষিতে প্রাণঘাতী জৈব অস্ত্রের অন্যতম উপাদান ব্রুসেলা ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধে তার বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান আন্তর্জাতিক মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছে।

সম্প্রতি বহুমুখী গবেষণার অঙ্গ হিসাবে কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা অঞ্জলী চ্যাটার্জী রিজিওনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে জৈব অস্ত্র ব্রুসেলা ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধে তরুণ বিজ্ঞানীদের নিয়ে গবেষণারও নেতৃত্বে রয়েছেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএস ও স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি প্রোগ্রামে স্বর্ণ পদকপ্রাপ্ত ড. দাস। তাঁর মতে, ‘মনে রাখতে হবে বহির্বিশ্বেও যে প্রাণের সঞ্চার নেই, তা আমরা জোর গলায় বলতে পারি না। এলিয়েন লাইফ ফর্মও থাকতেই পারে। তা থেকে এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল সেটেলমেন্টে মানুষের কোনো ক্ষতি বা সংক্রমণের আশঙ্কাও একেবারে নস্যাৎ উচিত হবে না। এক্ষেত্রে সব কিছুর সমান্তরাল ধারায় প্রতিরোধের শক্তি আহরণেও গবেষণা দরকার বলেই আমি গভীর ভাবে বিশ্বাস করি। কারণ, বহির্বিশ্বের কিছুটা আমরা জেনেছি, অনেক কিছুই এখনও কিন্ত অজানা। সবে তো আমরা পথ চলা শুরু করেছি।’
সব মিলিয়ে, ১৯৬৮ সালে স্ট্যানলি কুরবেক পরিচালিত মহাকাব্যিক বিজ্ঞান কল্পকাহিনী ২০০১:আ স্পেস ওডিসি, যা ছিল গ্রহান্তরে প্রাণের অনুসন্ধানে এক ধ্রুপদী রূপকল্প, বাস্তবে ২০২৫ সালে তার শরিক এবার আমাদের কলকাতা। কারণ, এই শহরের বুকেই তাঁর গবেষণাগারে এক গোলকের কাঠামোয় ইউরোপা, মঙ্গল বা চাঁদের পরিবেশ কৃত্রিমভাবে তৈরি করে ডায়াটমের সাহায্যে কীভাবে মানুষের প্রাণধারণের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা যায়, তার গবেষণা চালাচ্ছেন ড. শতদল দাস।
সেই গবেষণার সূত্র ধরেই গ্রহান্তরেও ‘মহা ভারত’ -এর পত্তনে সারা দেশ আজ আঁখি মেলে চেয়ে রয়েছে কলকাতার দিকে।