নজরুল স্মৃতি-বিজড়িত শান্তিপুরে ছায়ানট

ছায়ানট এর নজরুল স্মরণ

গত ১৭ আগস্ট মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলামের  প্রয়াণ মাসে, নজরুল স্মৃতি-বিজড়িত শান্তিপুরে ছায়ানট (কলকাতা) এবং সালৌনি পারফর্মিং আর্টস (শান্তিপুর) যৌথভাবে আয়োজন করে ‘নজরুল স্মরণ’। শান্তিপুরে বন্ধুসভা হলে ৩ ঘন্টা ব্যাপী অনুষ্ঠান হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিকল্পনা ও পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সোমঋতা মল্লিক এবং পীতম ভট্টাচার্য। শান্তিপুরে নজরুল একাধিকবার এসেছিলেন। সেই সম্পর্কে আলোকপাত করেন নজরুল গবেষক ও সঙ্গীতশিল্পী সোমঋতা মল্লিক। শান্তিপুর পৌরসভার উদ্যোগে প্রকাশিত ‘আমাদের শান্তিপুর’ বই থেকে জানা যায় – ১৯২৭ সালে নজরুল প্রথমবার শান্তিপুর আসেন। মুসলিম স্কুলের মাঠে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে তিনি নিজের লেখা অনেকগুলি কবিতা পাঠ করেন। পরবর্তীতে কালী মুখার্জীর মাঠের একটি সভায় বক্তৃতা দিতে এসেছিলেন। সেখানে সাহিত্য বিষয়ে বক্তৃতা দেন।

সোমঋতার কথায় জানা যায় – ১৯৩৪ সালে ২২ জুলাই শান্তিপুর নিবাসী খান বাহাদুর মোহাম্মদ আজিজুল হককে শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পর শান্তিপুরেই সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। নজরুল এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। স্বকণ্ঠে তিনি স্বরচিত গান গেয়ে শোনান। শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্যে নিবেদন করেন –

সুতরাগড় বেচুমিঞা স্ট্রিটে মাস্টার আব্দুল আজিজ – এর বাড়িতে রাত্রি যাপন করেন। সোমঋতার কথায় জানা যায় – ১৯৩৪ সালে ২২ জুলাই শান্তিপুর নিবাসী খান বাহাদুর মোহাম্মদ আজিজুল হককে শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পর শান্তিপুরেই সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। নজরুল এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। স্বকণ্ঠে তিনি স্বরচিত গান গেয়ে শোনান। শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্যে নিবেদন করেন –

শুধু নদীয়ার নহ তুমি, আজ

বাঙলার গৌরব।

দিগদিগন্তে লুটাইয়া পড়ে

তব যশঃ সৌরভ।

জলঙ্গী অঞ্জনা চূর্ণীতে

বাজে তরঙ্গ কল সঙ্গীতে

কুলুকুলু রবে কূলে তাহাদের

ধ্বনিছে তোমার স্তব।।

হৃদয় আসন পাতা ছিল, আজ

পেলে রাজাসন ধীর;

ধন্য হইল শিরোপা আজিকে

বরিয়া তোমার শির।

ওগো বীর, তুমি রাজসম্মান

নিলে জয় করি, লও নাই দান;

সুন্দরতর আজ তাই তব

শুভ বিজয়োৎসব।।

দিগদিগন্তে লুটাইয়া পড়ে

তব যশঃ সৌরভ।।

somrita mallik
সঙ্গীত পরিবেশন করছেন সোমঋতা মল্লিক ও তাঁর সহযোগীরা

ছায়ানটের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন – চম্পা মিত্র, গোপা দাস মজুমদার, গৌরী ধর, রীতা দে রায়, অনিন্দিতা ঘোষ, স্নেহাঙ্গনা ভট্টাচার্য্য এবং সুরূপা মল্লিক। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সমবেতভাবে পরিবেশিত হয় নজরুলের দেশাত্মবোধক গান। সালৌনি পারফর্মিং আর্টস-এর পক্ষ থেকে বক্তৃতা দেন উদয়ন মুখার্জী। ‘স্বদেশ ও সম্প্রীতি’ শিরোনামে বিশেষ নিবেদনে অংশগ্রহণ করেন সোমঋতা মল্লিক এবং পীতম ভট্টাচার্য। স্বাধীনতার মাসে পীতম ভট্টাচার্য – এর নির্বাচনে ছিল জন্মভূমি আজ (বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়), কান্ডারী হুঁশিয়ার (কাজী নজরুল ইসলাম), জননী জন্মভূমি (সুভাষ মুখোপাধ্যায়) এবং ভারতবর্ষ (দেবেশ ঠাকুর) – এর মতো জনপ্রিয় কবিতা। সেই সঙ্গে সোমঋতা গেয়ে শোনান নজরুলের দেশাত্মবোধক গান। নৃত্য পরিবেশন করেন তন্বঙ্গী চক্রবর্তী এবং শ্রীতমা গোস্বামী। সমবেতভাবে নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন ধ্রুবতারা – এর শিল্পীরা। একক আবৃত্তিততে প্রীতিশ দত্ত। নজরুলের শিশুদের জন্য লেখা কবিতা লিচু চোর – এর সমবেত আবৃত্তি শোনা যায় সালৌনি পারফর্মিং আর্টস-এর শিশু শিল্পীদের কণ্ঠে। বড়দের পরিবেশনায় ছিল কাজী নজরুল কে নিবেদিত কবিতা কোলাজ।

সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মৃন্ময় বাগ।